বহুল আলোচিত রিফাত হত্যার রায় আাজ

বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা হবে আজ (৩০ সেপ্টেম্বর)। বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আছাদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করবেন।

এ মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক অন্য ১৪ আসামির বিরুদ্ধেও সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবারই বরগুনা নারী ও শিশু আদালতে এই সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষ হয়। যেকোনো দিন রায়ের তারিখ নির্ধারণ করতে পারেন আদালত। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সব আসামির পক্ষে-বিপক্ষে আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। সব শেষে নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী, ১ নম্বর সাক্ষী থেকে ৭ নম্বর আসামি হওয়া আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত।

চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো: মুসা এখনো পলাতক। বাকি আসামিরা হলেন রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হূদয় ওরফে টিকটক হূদয়, মো: হাসান, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো: সাগর ও কামরুল ইসলাম সাইমুন। এই ১০ আসামির মধ্যে মিন্নি জামিনে আছেন। পলাতক মুসা ছাড়া বাকিরা আছেন কারাগারে।

রায়কে ঘিরে বরগুনার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সজাগ দৃষ্টি রাখছে পুলিশ। জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের নিরাপত্তাচৌকি বসানো হয়েছে। এ ছাড়া র‌্যাব সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও টহল দিচ্ছে রাস্তায় রাস্তায়।

এদিকে এ মামলার রায়ে রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বেকসুর খালাস পাবে বলে প্রত্যাশা তার বাবা মো: মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের। একই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম।

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, আমরা আসলেই হয়রানির শিকার। জীবন বাজি রেখে মিন্নি তার স্বামীকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে ব্যর্থ হলো। অথচ মিন্নি প্রধান সাক্ষী থেকে এখন আসামির কাঠগড়ায়, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে মিন্নির উপস্থিতিতে কলেজের শহীদ মিনারে হত্যার পরিকল্পনার যে মিটিংয়ের কথা বলা হয়েছে, সেখানে মিন্নি ছিল না। আহত রিফাত শরীফকে মিন্নি হাসপাতালে নিয়ে গেছে। কিন্তু সে বিষয়টি চার্জশিটের কোথাও নেই।

মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, যদি কেউ কাউকে খুনের পরিকল্পনা করে তাহলে সে কখনও তাকে বাঁচাতে যায় না। মিন্নি যেভাবে রামদার নিচে গিয়ে তার স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে এবং পরে রিফাতকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে, এতেই বোঝা যায় মিন্নি নির্দোষ। মিন্নি কোনোভাবেই হত্যায় জড়িত নয়। আমরা মনে করি, আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। তাই আশা করছি মিন্নি বেকসুর খালাস পাবে।

অপরদিকে, রায় প্রসঙ্গে নিহত রিফাত শরীফের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ জানান, তিনি আজকের দিনটির জন্য দীর্ঘ ১৮ মাস প্রতীক্ষায় ছিলেন। প্রকৃত অপরাধীরা সর্বোচ্চ শাস্তি পাবেন বলে তিনি আশাবাদী।