তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড: হাছান মাহমুদ বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসায় ভারত-পাকিস্তানসহ সমগ্র উপমহাদেশ জুড়ে তোলপাড় হচ্ছে। শুধু দলকানা বিএনপির মুখে সমালোচনাই চলছে।
আজ শনিবার ঢাকায় মিন্টু রোডের সরকারি বাসভবনে দেশের চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক সমিতির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, প্রযোজক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল সংস্থা-আইএমএফের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ সময় ড: হাছান বলেন, আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের শেষে আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতকেও ছাড়িয়ে যাবে। অর্থনৈতিক, মানবিকসহ সব সূচকে আমরা পাকিস্তানকে বহু আগেই এবং অনেক সূচকে ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছি। বিশেষ করে এখন অর্থনৈতিক সূচক যেমন পার ক্যাপিটা জিডিপি এর ক্ষেত্রেও আমরা ভারতকে ছাড়িয়ে যাচ্ছি।
শুধু আইএমএফ নয়, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা মহামারির এ বছরে ভারত-পাকিস্তানসহ পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই যেখানে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক, সেখানে বাংলাদেশ সেই হাতেগোনা কয়েকটি দেশের একটি যাদের প্রবৃদ্ধি ধনাত্বক বলে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, যে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব বিশ্বে সর্বোচ্চ আর মাথাপিছু কৃষিজমির পরিমাণ সর্বনিম্ন, ঝড়-বন্যা-জলোচ্ছ্বাস যে দেশের নিত্যসঙ্গী, জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে সব প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করে সেই বাংলাদেশের এই অভূতপূর্ব অগ্রগতি নিয়ে ভারত-পাকিস্তানসহ সমগ্র উপমহাদেশে ব্যাপক আলোচনা-প্রশংসা হচ্ছে।
ভারতের গণমাধ্যমে খবর ও টক-শোতে তাদের বুদ্ধিজীবীরা এবং পাকিস্তানের গণমাধ্যমও বাংলাদেশ সরকারের ব্যাপক প্রশংসা করছে। কিন্তু এদেশের একটিমাত্র দল বিএনপি এবং তার কিছু মিত্র এই প্রশংসা করতে পারছে না বলে মন্তব্য করেন ড: হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিএনপি শুধু বলে বেড়ায়, সরকার তাদের কথা বলতে দেয় না অথচ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব সকালে একবার সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন, বিকেলে আরেকবার করেন। এবং টিভি খুললেই দেখা যায়, টেলিভিশনগুলোতে তাঁর এই বিষোদগার প্রচার হয়। তারা শুধু অহেতুক বিষোদগারই করতে পারে, প্রশংসা করতে পারে না।
এটি বিএনপির রাজনৈতিক ও চিন্তা-চেতনার দৈন্য এবং তারা যে দলকানা অর্থাৎ শুধু দল নিয়ে ভাবে, দেশ ও দশের কথা ভাবে না, সেটিরই বহিঃপ্রকাশ, যোগ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
এ সময় চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী চেতনায় এদেশে যে চলচ্চিত্রের যাত্রা শুরু, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সেই চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশে এরইমধ্যে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। চলচ্চিত্রে অনুদানের সংখ্যা ও অর্থের পরিমাণ দুই-ই বাড়ানো হয়েছে। নতুন সিনেমা হল নির্মাণ, বন্ধ হল চালু ও সংস্কারের জন্য এক হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করে স্বল্পসুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। করোনার মধ্যেও এ বছর প্রায় ২৫টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছে। সরকার বিশ্বাস করে, দেশের মানুষকে সুস্থ বিনোদন দেওয়া ও তরুণ সমাজকে অবক্ষয় থেকে রক্ষার ক্ষেত্রে চলচ্চিত্রের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।