বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপঃ তামিমদের বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহর দলের স্বস্তির জয়

ছোট লক্ষ্য। জিততে হলে ১০৪ রান করতে হবে। এই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় মাহমুদউল্লাহ একাদশ। রানের খাতা খোলার আগে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। চরম বিপর্যয়ে মাহমুদলউল্লাহ একাদশের হাল ধরেন মুমিনুল হক ও নুরুল হাসান সোহান। দুই ব্যাটসম্যানের দৃঢ়তায় বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম একাদশকে পাঁচ উইকেটে হারিয়েছে মাহমুদউল্লাহ একাদশ।

চলতি টুর্নামেন্টে এটি মাহমুদউল্লাহ একাদশের প্রথম জয়। এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নাজমুল একাদশের কাছে হেরে যায় তারা। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেই হারের স্বাদ পেল তামিম ইকবালের দল।

আজ মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ছোট লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৭ ওভারে জয় তুলে নেয় মাহমুদউল্লাহ একাদশ। যদিও ইনিংসের শুরুটা ছিল হতাশার। রানের খাতা খোলার আগেই তিন উইকেট হারিয়ে বসে তারা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে আউট হন মোহাম্মদ নাঈম। তরুণ এই ওপেনারকে এলবির ফাঁদে ফেলেন মুস্তাফিজুর রহমান। তৃতীয় ওভারে লিটন দাসকে সরাসরি বোল্ড করেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। একই ওভারে ইমরুলকেও নিজের শিকার বানান সাইফউদ্দিন।

দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় রানের খাতা খোলেন অধিনায়ক মাহমদউল্লাহ। মুমিনুল হকের সঙ্গে ৩৯ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক। ভালোভাবেই এগুচ্ছিলেন দুজন। ১৪.২ ওভারে মাহমুদউল্লাহকে সরাসরি বোল্ড করেন তাইজুল ইসলাম। ৩৯ বলে ১০ রান করে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ।

এরপর মুমিনুলকে সঙ্গ দেন নুরুল হাসান সোহান। এই জুটিতে আসে ৩৮ রান। এই জুটিতে জয়ের বেশ কাছে চলে যায় মাহমুদউল্লাহ একাদশ। মাঝে মুমিনুলকে ফিরিয়ে ছন্দ পতন ঘটান তাইজুল। ২২.১ ওভারে তাইজুল বলে শট হাঁকাতে যান মুমিনুল, কিন্তু বল উপরে উঠে যায়। মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ ফেলে মুমিনুলকে জীবন উপহার দেন মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি। অবশ্য পরের বলে আর রক্ষা হয়নি। তাইজুলের বলেই বোল্ড হন মুমিনুল। ফেরার আগে ৬২ বলে ৩৯ রান করেন তিনি।

মুমিনুল ফিরলে সাব্বির রহমানকে নিয়ে বাকি কাজ সারেন সোহান। ধীরে সুস্থে খেলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তিনি। ম্যাচ শেষে ৩৮ বলে ৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন সোহান। চার রানে অপরাজিত ছিলেন সাব্বির।

বল হাতে আট রান খরচায় দুই উইকেট নেন সাইফউদ্দিন। ১৪ রানে মুস্তাফিজ নেন একটি উইকেট। তাইজুল নেন দুই উইকেট।  

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ২৩.১ ওভারে ১০৩ রানে অলআউট হয় তামিম একাদশ। ইংনিসের শুরুতেই হতাশ করেন ওপেনার তামিম। সাত মাস পর ফিরে দুই রানে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। ইনিংসের ১.৩ নম্বর বলে পেসার রুবেল হোসেনের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন ওয়ানডে অধিনায়ক।

তামিমের ফেরার পরই বৃষ্টি নামে। বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ থাকায় ৪৭ ওভারে নেমে আসে ম্যাচ। পরে ব্যাট করতে নেমে মাহমুদউল্লাহ একাদশের বোলারদের সামনে মুখ থুবড়ে পড়েন তামিম একাদশের ব্যাটসম্যানরা। অষ্টম ওভারে আউট হন তানজিদ হাসান তামিম। জুনিয়র তামিমকেও নিজের শিকার বানান রুবেল হোসেন। ১৮ বল খেলে ২৭ রান করেন তরুণ এই ওপেনার। একই ওভারের পঞ্চম বলে মোহাম্মদ মিঠুনকে সাজঘরে পাঠান রুবেল। মুমিনুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন মিঠুন। এক রানে শাহাদাত হোসেনকে বিদায় করেন সুমন খান।

এরপর সুমন-মিরাজদের বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বেশিদূর যেতে পারেনি তামিম একাদশ। ২৩.১ ওভারে ১০৩ রানে অলআউট হয় তারা। তানজিদের ২৭ রানের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন এনামুল হক বিজয়। সাইফউদ্দিন করেন ১২ রান। মেহেদী হাসান করেন ১৯ রান।

পাঁচ ওভারে ১৬ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন রুবেল হোসেন। ৩১ রান দিয়ে সমান তিন উইকেট পান সুমন। দারুণ বোলিং করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজও। চার ওভারে মাত্র দুই রান দিয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন তিনি। সমান দুটি উইকেট নিয়েছেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লবও।