ভাঙনের মুখে ডক্টর কামাল হোসেন এর গড়া দল গণফোরাম। গতানুগতিক রাজনীতির বাইরে নতুন কিছু করার লক্ষ্যে ১৯৯২ সালে গড়ে ওঠা দলটি সবশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গাঁটছড়া বাঁধে বিএনপির সঙ্গে। নির্বাচনে হোঁচট খেয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয় দলে। গণফোরামের একাংশের নেতা সুব্রত চৌধুরীর অভিযোগ রেজা কিবরিয়া দলকে কোম্পানিতে পরিণত করেছেন। আর রেজা কিবরিয়ার দাবি একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে সরকারের হয়ে কাজ করায় বহিষ্কার করা হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালে তৈরি হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপির নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট হলেও মূল নেতৃত্বে থাকেন ডক্টর কামাল হোসেন। এতে আলোচনায় আসে তার দল গণফোরাম।
নির্বাচনের সময়টা বেশ ভালোই কাটছিল। সামনে ক্ষমতার হাতছানি! তবে ভোটে শোচনীয় পরাজয়ের পর হাতাশা জেঁকে বসে দলে। সন্দেহ, অবিশ্বাস ও দ্বন্দ্বে ২০১৯ সালে পুরোনো কমিটি ভেঙে দিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় রেজা কিবরিয়াকে। এতে ক্ষুব্ধ হন পুরোনো অনেক নেতা। দলে দেখা দেয় অনৈক্য। গেলো ২৬ সেপ্টেম্বর বাদ পড়া সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু ও আবু সাইয়িদের নেতৃত্বে বিদ্রোহী অংশ জাতীয় প্রেসক্লাবে বর্ধিত সভা করে ২৬ ডিসেম্বর কাউন্সিলের ঘোষণা দেয়।
গণফোরাম একাংশের নেতা সুব্রত চৌধুরী বলেন, ড: রেজা কিবরিয়ার সাথে আরও তিন চারজন মিলে গণফোরামকে এখন একটি কোম্পানিতে রূপান্তরিত করেছেন। এখানে একজন চেয়ারম্যান একজন কোম্পানি সচিব দুই চার জন পরিচালক মিলে যে অপসংস্কৃতি চালু হয়েছে এর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ। আমি বলবো ড: রেজা কিবরিয়া গণফোরামের জন্যতো বটেই এমনকি রাজনীতির জন্যও বিষফোঁড়া। তার বহিষ্কার করার কোনও অধিকার নেই।
এদিকে ১৭ অক্টোবর আলাদা সভা করে ১২ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের ঘোষণা দেন ডক্টর কামালের নেতৃত্বে থাকা গণফোরামের অন্য অংশের নেতারা।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড: রেজা কিবরিয়া বলেন, দল থেকে চলে যাওয়ার সময় দলের বিরুদ্ধে কাজ করবে এটি খুব দুঃখজনক। দল থেকে মানুষ চলে যায় এটি নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। দলের ভেতরে থেকে দলের ক্ষতি করেছে অনেকে এবং দলের প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে কটূক্তি করেছে। বিরোধীদলগুলোর মধ্যে যখন বৃহত্তর ঐক্যের কথা বলা হচ্ছে, তখন নিজেদের দলের ভাঙনে মাঠ পর্যায়ে কতোটা প্রভাব পড়বে তা নিয়ে সংশয়ে দলের অন্যান্য নেতারা।