করোনায় বন্ধ হওয়া আকাশপথ খোলার চার মাস পরও ভিসা জটিলতা ও বিভিন্ন দেশের নানা বিধি-নিষেধের কারণে আন্তর্জাতিক রুটে কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পাচ্ছে না বাংলাদেশি এয়ারলাইন্সগুলো। যদিও উড়োজাহাজ লিজের ভাড়া, ঋণের সুদ ও রক্ষণাবেক্ষণে খরচ বাবদ বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এতে গত তিন মাসে বাংলাদেশ বিমানের মোট লোকসান হয়েছে ১২৩৩ কোটি টাকা। একই রকম সংকটে পড়ে আছে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোও।
করোনাভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর একে একে বন্ধ হতে থাকে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল। এরপর স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত ১৬ জুন থেকে আন্তর্জাতিক রুটে সীমিত পরিসরে ফ্লাইট চালু হয়। বিভিন্ন দেশ পর্যায়ক্রমে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ১৮টি রুটে সরাসরি ফ্লাইট যাচ্ছে। কিন্তু দেশগুলোর নানা শর্তের কারণে যাত্রী সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশ কমেছে। দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলোর সক্ষমতার মাত্র ৩০ শতাংশ কাজে লাগছে। অথচ ৭০ শতাংশ অব্যবহৃত থাকলেও খরচ আবার আগের তুলনায় বেড়ে গেছে। আর এতে করে ১৮টি উড়োজাহাজের বহর নিয়ে সবচেয়ে বেশি লোকসানে পড়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাব্বির হোসেন জানান, তাদের ফ্লাইট সক্ষমতার মাত্র ২০ ভাগ বর্তমানে অপারেশন করতে পারছেন। এ কারণে জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর- এই তিন মাসে তাদের ক্যাপাসিটি লস হয়েছে ১১০৮ কোটি টাকা আর অপারেটিং লস হয়েছে ১২৫ কোটি টাকা। মোট হিসাবে এই তিন মাসে বাংলাদেশ বিমানের লোকসান হয়েছে ১২৩৩ কোটি টাকা।
করোনা মহামারির এ ধাক্কায় নানা জটিলতার কারণে আন্তর্জাতিক রুটে সুবিধা করতে পারছে না বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোও। এ অবস্থায় সরকারি সহযোগিতা চায় তারা।
এ প্রসঙ্গে ইউএস বাংলার জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো: কামরুল ইসলাম বলেন, সরকারের আর্থিক সহযোগিতা ছাড়া আসলে এ মুহূর্তে টিকে থাকা খুবই কঠিন।
এ প্রেক্ষাপটে বিমানবন্দর ব্যবহারের বিভিন্ন চার্জ ৪ থেকে ৬ মাসের জন্য ২৫ থেকে ১০০ শতাংশ মওকুফে বিমান মন্ত্রণালয় নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সেসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এখনও অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন দেয়নি, এমনটাই জানান সিভিল এভিয়েশন চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান।
করোনা মহামারির আগে আন্তর্জাতিক রুটে প্রতিদিন গড়ে ১২০টি ফ্লাইট চললেও বর্তমানে চলছে মাত্র ৪০টি।