আদালতে ন্যায়বিচার চান আবরারের বাবা

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) হত‌্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া আবরার ফাহাদ রাব্বীর বাবা মো: বরকত উল্লাহ আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চেয়েছেন।

সোমবার (৫ অক্টোবর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো: কামরুজ্জামানের আদালতে তিনি বলেন, আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি ন্যায়বিচার চাই।

দুপুর ১২টায় এজাহারের সমর্থনে জবানবন্দি দেওয়া শুরু করেন মো: বরকত উল্লাহ। তিনি প্রায় ৩৫ মিনিট ধরে জবানবন্দি দেন। এরপর আসামি অনিক সরকারের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান তাকে জেরা শুরু করেন। জেলা অব্যাহত থাকা অবস্থায় মঙ্গলবার পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণ মুলতবি করেন আদালত।

জবানবন্দিতে বরকত উল্লাহ বলেন, আমি কাশফুল নামের একটি এনজিওতে চাকরি করি। আমার ছেলে আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক‌্যাল ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। থাকতো শেরেবাংলা হলের নিচতলার ১০১১ নম্বর রুমে। গত বছর ৭ অক্টোবর ফজরের সময় ফোনে জানতে পারি যে, আমার ছেলেকে বুয়েটের কতিপয় ছাত্র মারধর করে গুরুতর জখম করেছে। সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে শেরেবাংলা হলের কতিপয় ছাত্র ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করি। পরে ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জানতে পারি, বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ছাত্র মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতামিম ফুয়াদ, মো: অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, মো: মনিরুজ্জামান মনির, মো: মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো: মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো: মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম তানভীর, হোসেন মোহাম্মাদ তোহা, মুহাম্মাদ মোর্শেদ-উজ-জামান মন্ডল ওরফে জিসান, আকাশ হোসেন, শামীম বিল্লাহ, এএসএম নাজমুস সাদাত, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম, মোর্শেদ অমর্ত‌্য ইসলাম, মুনতাসির আল জেমি ও মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রাসহ আরও কয়েকজন ছাত্র গত বছর ৬ অক্টোবর রাত ৮টা ৫ মিনিটে আবরারকে তার ১০১১ নম্বর রুম থেকে ডেকে নেয়। রাত ২টা ৩০ মিনিটের মধ্যে শেরেবাংলা হলের ২০১১ ও ২০০৫ নম্বর রুমে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ক্রিকেট স্ট্যাম্প, লাঠি এবং রশি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রচণ্ড মারধর করে। ঘটনাস্থলেই আবরার মারা যায়। আসামিরা আমার ছেলের মৃত‌্যু নিশ্চিত করে হলের দ্বিতীয় তলার সিড়িতে ফেলে রাখে। পরবর্তীতে কতিপয় ছাত্র সেখান থেকে আমার ছেলেকে ঢাকা মেডিকেলে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর আমি থানায় মামলা করি।

তিনি বলেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরেই আসামিরা আমার ছেলে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। পরবর্তীতে তদন্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পারি, আসামি সকাল, রবিন, অনিক, মনির, জিয়ন, মুজাহিদ, তানভীর ও সাদাত গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে আসামিরা আমার ছেলে আবরারকে কীভাবে হত্যা করেছে তা বিস্তারিত বলেছে।