খুলনায় গণপরিবহন বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা

টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে আজ খুলনায় বিএনপি’র মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় নগরীর কেডি ঘোষ রোডের দলীয় কাযালয়ের সামনে এ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে দলটি।

এদিকে, বিএনপি’র এই সমাবেশ ঘিরে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কার অজুহাতে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত খুলনার ১৮টি রুটে ২৪ ঘণ্টা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে বাস মালিক সমিতি।

তবে, কোনো ধর্মঘট ছাড়াই কেন বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হলো তার সুনির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি সমিতির পক্ষ থেকে। এমনকি নৌ-রুটেও সকল পরিবহন চলাচল ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করেছে মালিকপক্ষ। ফলে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে সড়ক ও নৌ পথের গণপরিবহন বন্ধের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সোনা বিষয়টি জানিয়েছেন।

যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন জানান,  বিএনপি’র মহাসমাবেশ উপলক্ষে যে কোনো ঝামেলা হতে পারে। ওই ঝামেলা এড়াতে বাস চালাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। এ জন্য শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টা শহরের কোনো পরিবহন ছেড়ে যাবে না এবং কোনো পরিবহন শহরে ঢুকবে না। এটা কোনো ধর্মঘট বা কর্মবিরতি নয়, বিশৃঙ্খলা এড়াতে পরিবহন চালকেরাই ওই পদক্ষেপ নিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

অপরদিকে, জেলার প্রত্যন্ত এলাকার কয়রার মদিনাবাদ ও জোড়শিং এবং সাতক্ষীরার নীলডুমুর এ তিনটি রুটে লঞ্চ চলাচল সাময়িক স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এমনকি শনিবার সকাল থেকে পূর্ব-পশ্চিম রূপসা ঘাট এবং জেলখানা ও সেনেরবাজার ঘাটেও ট্রলার পারাপার বন্ধ রেখেছেন ট্রলার মাঝিরা।

যাত্রীবাহী পরিবহন বন্ধে অল্প সময়ের এই ঘোষণা পৌঁছায়নি যাত্রী সাধারণের কাছে। যে কারণে হঠাৎ পরিবহন বন্ধ করে দেয়ায় গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। কয়েকজন যাত্রী গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারার অনিশ্চিয়তায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এমনকি সোনাডাঙ্গা ও রূপসা টার্মিনালে এসে বাস না পেয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে অনেক যাত্রীকে।

এ বিষয়ে নগর বিএনপি’র সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করে জানান, শনিবার খুলনা বিএনপি’র বিভাগীয় সমাবেশে নেতা-কর্মীদের ঢল ঠেকাতে সরকারের নির্দেশেই পরিবহন বন্ধ করা হয়েছে। সমাবেশকে পণ্ড করার জন্য এটি পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশে মানুষের ঢল নামার আতঙ্কে পরিবহন বন্ধ করা হতে পারে- এ বিষয়টি মাথায় রেখেই সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ওই মহাসমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি। এ মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করবেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম। বিশেষ অতিথি থাকবেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চোধুরী ও যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। এছাড়া প্রধান বক্তা থাকবেন ছয় সিটির মেয়র প্রার্থীরা।