নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন : প্রশাসনের অবহেলা ও স্বামীর সম্পৃক্ততা পেয়েছে তদন্ত কমিটি

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় প্রশাসনের অবহেলা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ঘটনায় গৃহবধূর স্বামীর সম্পৃক্ততা ছিল। স্থানীয় চৌকিদার, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও চেয়ারম্যান এবং বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) অবহেলা ছিল। আর অবহেলার ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো: মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের বেঞ্চে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

প্রতিবেদন দেখে প্রধান অভিযুক্ত দেলোয়ারের বিষয়ে হাইকোর্ট বলেন, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সে এই ক্ষমতা পেয়েছে।

সুন্দর প্রতিবেদনের জন্য অনুসন্ধান কমিটিকে ধন্যবাদ জানান আদালত।

আদালতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। ঘটনাটি আদালতের নজরে আনা আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও আবদুল্লাহ আল মামুনও ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী।

এর আগে গত ৫ অক্টোবর ঘটনাটি আদালতের নজরে আনার পর ফুটেজ সরাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সিডি বা পেনড্রাইভে কপি রেখে ভিডিও ফুটেজ সরাতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ ছাড়া ওই গৃহবধূর পরিবারকে সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ঘটনার বিষয়ে ভিকটিমের বক্তব্য গ্রহণে পুলিশের কোনো অবহেলা আছে কিনা, তা অনুসন্ধান করতে একটি কমিটি করে দিয়েছেন আদালত। নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কমিটিতে থাকবেন জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এবং চৌমুহনী সরকারি এসএ কলেজের অধ্যক্ষ। কমিটিকে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

এ ছাড়া বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় করা ফৌজদারি মামলার সবশেষ অবস্থা জানিয়ে ২৮ অক্টোবরের মধ্যে আদালতকে প্রতিবেদন দিতে বেগমগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

এসব আদেশ অনুসারে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে বলে আদালতকে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত মাসের ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে গৃহবধূর (৩৫) বসতঘরে ঢুকে তাঁর স্বামীকে পাশের কক্ষে বেঁধে রেখে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে শ্লীলতাহানি করে স্থানীয় বাদল ও তার বখাটে দল। ওই সময় গৃহবধূ বাধা দিলে তারা তাঁকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে মোবাইলে ভিডিওচিত্র ধারণ করে।

ঘটনার ৩২ দিন পর ৪ অক্টোবর দুপুরের দিকে গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ পেলে তা ভাইরাল হয়। এতে টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের।