বিএনপি নেতা টুকুর বক্তব্যকে ‘অশালীন’ আখ্যা জামায়াতের

জামায়াতে ইসলামী ও আওয়ামী লীগের মধ্যে পরকীয়া চলছে বলে গতকাল সোমবার মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তার এ বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াত। তারা টুকুর সেই বক্তব্যকে  ‘অশালীন’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, ‘সোমবার বিএনপির এক সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত, অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেছেন- তা দেশবাসীকে বিস্মিত করেছে। এটি কোনো রাজনীতিবিদের ভাষা হতে পারে না। তার এ বক্তব্য স্বৈরাচারী শাসনকে প্রলম্বিত করার ক্ষেত্র তৈরি করবে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যে মুহূর্তে দেশের সব গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধভাবে দেশে গণতন্ত্র ও জনগণের ন্যায্য ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর, সে সময় তার এ বক্তব্য জাতিকে হতাশ করেছে। তার বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান হয়, তিনি জনগণের ভাষা বুঝতে অক্ষম এবং তিনি জনগণের ভাষায় কথা বলতে পারেন না।’

বিবৃতিতে আবদুল হালিম বলেন, ‘বিগত এক যুগেরও বেশি সময় যাবত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা বর্তমান সরকারের জুলম-নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। যে দলটির আমীর, সেক্রেটারি জেনারেল, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্যসহ পাঁচজন শীর্ষস্থানীয় নেতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিচারের নামে প্রহসনের আয়োজন করে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে; আরও ছয়জন শীর্ষ নেতাকে দণ্ড দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে এবং তিনজন নেতা কারাগারে ইন্তেকাল করেছেন। সে দলটি সম্পর্কে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বক্তব্য সম্পূর্ণ রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত। তার বক্তব্যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করার ইঙ্গিত লুকিয়ে রয়েছে।’

হালিম বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও বেআইনি ঘোষণা সংক্রান্ত বিষয়ে তার (টুকু) কথা ও মর্মবেদনায় জনগণের মধ্যে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে, কার স্বার্থে এবং কাকে সন্তষ্ট করার জন্য তিনি এ বক্তব্য প্রদান করেছেন? আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, জামায়াতে ইসলামী কখনো কোনো আপস, গোপন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না এবং করার প্রশ্নই আসে না।’

জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জামায়াত শব্দটিকে ‘‘উর্দু’’ ভাষা বলে উল্লেখ করে অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন। আমরা আশা করছি, ভবিষ্যতে এ ধরনের অসংলগ্ন বক্তব্য প্রদান করা থেকে সংশ্লিষ্ট সবাই বিরত থাকবেন।’

এর আগে গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর হাজারীবাগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মুখে প্রায়ই শুনি, যেটা বুলি হয়ে গেছে। তারা প্রায়ই বলে, বিএনপি-জামায়াত, বিএনপি-জামায়াত। আমি বলছি, এখন সময় এসেছে আওয়ামী-জামায়াত, আওয়ামী–জামায়াত বলার। জামায়াতও উর্দু, আওয়ামী লীগও উর্দু- দুটো একসঙ্গে মিলবে ভালো। কেননা ওনারা (আওয়ামী লীগ) জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে, কিন্তু বেআইনি ঘোষণা করে না। তাহলে কি আমি বলব, ওনাদের পরকীয়া প্রেম চলছে!’