বিদায় গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার

কিংবদন্তি গীতিকবি, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ভোর সাড়ে ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তার পুত্রবধূ শাহানা মির্জা।

দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে বেতার, টেলিভিশন, সিনেমাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার গান রচনা করেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তার লেখা কালজয়ী গানও অসংখ্য। গীতিকবিতায় অবদান রাখার জন্য ২০০২ সালে তিনি লাভ করেন একুশে পদক । পাঁচবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

বিবিসি বাংলা তৈরি করা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিশটি বাংলা গানের তালিকায় ঠাঁই পায় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা তিনটি। তার লেখা কিছু কালজয়ী গান হলো-‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’, ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘চলে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে’ প্রভৃতি।

৯৪৩ সালের ফেব্রয়ারিতে কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মাজহারুল আনোয়ার। ষাটের শুরুতে গান লেখার হাতেখড়ি। ১৯৬৪ সালে রেডিও পাকিস্তানে গান লিখে ৫০ টাকা আয়ের মাধ্যমে তার পেশাদার গীতিকার জীবন শুরু। ১৯৬৫ সালে যুক্ত হন চলচ্চিত্রের সঙ্গে। সুভাষ দত্তের ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ ছবিতে ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’ গানটি দিয়ে চলচ্চিত্রের গান লেখা শুরু গাজী মাজহারুল আনোয়ারের।

শুধু গীতিকার হিসেবে নন, তিনি একজন সফল কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালকও। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ‘দেশ চিত্রকথা’। তার প্রযোজিত ও পরিচালিত ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম শাস্তি, স্বাধীন, শর্ত, সমর, শ্রদ্ধা, ক্ষুধা, স্নেহ, তপস্যা, উল্কা, আম্মা, পরাধীন, আর্তনাদ,পাষাণের প্রেম, এই যে দুনিয়া।