মিখাইল গর্বাচেভের শেষকৃত্য সম্পন্ন

সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বশেষ নেতা ও প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভকে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাহিত করা হয়েছে। কোনো প্রকার জাকজমকপূর্ণ আয়োজন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপস্থিতি ছাড়াই শনিবার তার মরদেহ দাফন করা হয়। গর্বাচেভ পশ্চিমাদেশগুলোর কাছে নানা কারণে জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি তার দীর্ঘ জীবিতকালে নিজের করা রাশিয়ার সংস্কারগুলোর অপরিপূর্ণতা দেখে গেছেন।

৯১ বছরে মারা যাওয়া গর্বাচেভের একটি সার্বজনীন অন্ত্যেষ্টক্রিয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। মস্কোর নাগরিকরা তাকে সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্যান্য নেতাদের মতো হল অব কলামে সম্মান প্রদর্শন করতে পারতেন। কিন্তু দীর্ঘদিন রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করা বর্তমান রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গর্বাচেভের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানের অস্বীকৃতি জানান। পুতিন নিজের ব্যস্ততার জন্য অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় উপস্থিত থাকছেন না বলে জানান।

১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট থাকাকালে দেশটিকে গণতান্ত্রিক শাসন কাঠামোতে রূপান্তর করেন গর্বাচেভব। গর্বাচেভকে অনেকে সোভিয়েত সম্রাজ্য ভেঙে পড়ার জন্য দায়িী করেন। তার কারণেই সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বে শক্তিধরের অবস্থান হারিয়েছে বলেও মনে করা হয়।

এদিকে, সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে ভিলেন গর্বাচেভ পশ্চিমাদের কাছে নায়ক হয়ে উঠেন। তার উদ্যোগে পশ্চিম ও পূর্ব জার্মানি একত্রিত হয়। তার চুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের স্নায়ু যুদ্ধের অবসান হয়। এজন্য ১৯৯০ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান গর্বাচেভ। তার পদক্ষেপের কারণে ১৫টি সোভিয়েত রিপাবলিক (অঞ্চল) স্বাধীনতার দাবি তুললে সোভিয়েন ইউনিয়ন ধরে রাখতে ব্যর্থ হন গর্বাচেভ। ঐ সময় বিচ্ছিন্ন সোভিয়েন ইউনিয়ন অর্থনীতিক দুর্দশার মুখোমুখি হয়। এজন্য অনেক রাশিয়ান গর্বাচেভকে ক্ষমা করবেন না।

এদিকে, ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের জেরে গর্বাচেভকে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যাননি কোনো পশ্চিমা দেশের নেতা। তাদের পক্ষ থেকে কোনো কর্মকর্তারাও তার কফিনে শ্রদ্ধা জানাননি। তবে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিকরুট তার একটি প্রতিনিধিদলকে নিয়ে মস্কোতে গর্বাচেভের কফিনে শ্রদ্ধা জানান। তিনি পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কোনো পরিকল্পনা করেননি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমেত্রি পেসকভ রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা রিয়াকে জানান, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী গর্বাচেভকে বিদায় জানাতে এসেছেন। তিনি পুতিনের সঙ্গে কোনো বৈঠক করার ইচ্ছা পোষণ করেননি।

সূত্র-আল জাজিরা।