ঢাকা: আজ ১৬ ডিসেম্বর ( বৃহস্পতিবার)। লক্ষ শহীদ ও মা-বোনের সম্ভ্রমহানির মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর দৃঢ়চেতা যে বাঙালি বিজয় ছিনিয়ে এনেছে, সে বিজয়ের আজ ৫০ বছর।
পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে আজ থেকে ৫০ বছর পূর্বে বাঙালি প্রথম মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস ছাড়ে। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন ভূখণ্ডের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলায় উদিত হয় নতুন সূর্য। বিশ্ব মানচিত্রে স্থান দখল করে নেয় ব-দ্বীপ বাংলাদেশ।
সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল নামবে। জাতি আজ কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে দেশের বীর সন্তানদের। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সব প্রান্তের মানুষ অংশ নেবে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে।
এ বছর বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। এবারের বিজয় দিবস জাতির কাছে একটু আলাদা রকমের অনুভূতির। ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করার পর এ বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে বাংলাদেশ।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পৃথক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বাণীতে দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তারা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, অগণিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদের আত্মত্যাগের কথা, যাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়েছিল।
মহান বিজয় দিবস উদযাপনে এবার জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে প্রত্যুষে তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ।
এ ছাড়া, জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দসহ বিদেশি অতিথিরা। বরাবরের মতো থাকবে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর আলাদা আলাদা কুচকাওয়াজ।
আকাশে মহড়া দেবে হেলিকপ্টার ও জঙ্গি বিমান। থাকবে ট্যাংক বহরসহ সমরাস্ত্রের আলাদা প্রদর্শনী। সশস্ত্র বাহিনীর প্যারেডের পাশাপাশি বৈমানিকদের কসরত, প্যারাসুট জাম্পসহ রয়েছে নানান আয়োজন।
বিশেষ কুচকাওয়াজে অংশ নেবে ভারত, রাশিয়া, ভুটান, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দুই দিনের অনুষ্ঠানমালার মূল আয়োজন হচ্ছে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়।
‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ প্রতিপাদ্যে ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর এসব অনুষ্ঠানে দেশি ও বিদেশি প্রায় তিন শতাধিক অতিথি অংশ নেবেন।
আজ বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে প্রধানমন্ত্রী সারা বাংলাদেশে একটি শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন, সেখানে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেবেন।
আজ সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে।
দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আজ সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। এ উপলক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে।
প্রভাতনিউজ/এবিএস