লকডাউন নিয়ে সরকারের লেজেগোবরে অবস্থা, দুর্ভোগে জনগণ : বিএনপি

করোনা মোকাবিলায় সরকারের লেজেগোবরে অবস্থা বলে উল্লেখ করেছে বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, লকডাউন নিয়ে সরকারের মধ্যে দুই রকম বক্তব্যে চরম সমন্বয়হীনতার সৃষ্টি হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। 

তিনি বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে সরকারি অব্যবস্থাপনায় লকডাউন বা নিষেধাজ্ঞা কোনোটাই মাঠ পর্যায়ে কার্যকর হচ্ছে না। বরং সরকারের পরস্পরবিরোধী পদক্ষেপে মানুষ আরো বেশি করোনা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। সর্বত্রই লেজেগোবরে অবস্থা। নানা দুর্ভোগে জনগণ। এমরান সালেহ আরও বলেন, সরকারের যারা এ ধরনের সিদ্ধান্ত দিচ্ছে, তাদেরকে বেতন-ভাতা কিংবা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। কিন্তু তাদের সিদ্ধান্তে জনগণকে পড়তে হয় বিপাকে। আয়-রোজগার, সংসার চালানো কিংবা ভবিষ্যতের চিন্তায় জনগণ আজ দিশেহারা।
লকডাউন বা নিষেধাজ্ঞা কোনটাই যে কার্যকর হচ্ছে না, তার প্রমাণ-সড়কে দীর্ঘ যানজট। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা দেয়। লকডাউনের দুই দিন অতিবাহিত হয়েছে। কোভিড-১৯-এর ২য় ঢেউ বাংলাদেশে আরও বেশি শক্তি নিয়ে আক্রমণ করেছে। মূলত, গত মাসের ১ম সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ বাড়লেও তা মোকাবিলায় কোনো কার্যকর ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সরকার। মার্চের শুরু থেকে সংক্রমণ বাড়ার সময় হতেই বিশেষজ্ঞ মহল সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে কার্যকর ও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করলেও সরকার উৎসব আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত থেকেছে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বিএনপি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও দলীয় কার্যক্রম স্থগিত করেছে। সরকারকে উৎসব আয়োজন স্থগিত করে করোনা মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। সরকার সেই আহ্বানে কর্ণপাত করেনি। তাদের কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক গতিতে চালিয়ে জনগণকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে নিক্ষেপ করেছে। বাংলাদেশে সংক্রমণের হার রকেট গতিতে বেড়েই যাচ্ছে। গত এক মাসে সংক্রমণের হার ২ শতাংশ থেকে ৯৬ শতাংশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। লকডাউন নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় জনমনে বিভ্রান্তি হচ্ছে। 

এমরান সালেহ আরও বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা লকডাউন বললেও উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন- এটি লকডাউন নয়, কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। সরকার গণবিচ্ছিন্ন বলেই করোনা মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের দুঃখ-দুর্দশা মোকাবিলায় তারা বরাবরই উদাসীন।