ভাষা সৈনিক, মওলানা ভাসানীর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সাবেক সাংসদ এম নূরুল ইসলাম দাদুভাই (৯১) বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেছেন। আজ বুধবার সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন খুলনার প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউউন)। তাঁর পরিবারে তিন মেয়ে, তিন ছেলে ও স্ত্রী রয়েছেন। আজ বাদ আসর খুলনার সার্কিট হাউস ময়দানে এম নূরুল ইসলামের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
খুলনার সবচেয়ে প্রবীণ রাজনীতিবিদ এম নূরুল ইসলাম দাদুভাই বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কয়েক বছর ধরে কোনো কর্মসূচিতে বা বাড়ির বাইরে আসতে পারতেন না। আজ বুধবার ভোর রাতে তাঁর শরীরের অবস্থার কিছুটা অবনতি হলে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু এবং সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি তাঁকে স্থানীয় ক্লিনিক থেকে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি না ফেরার দেশে চলে যান।
এম নূরুল ইসলাম দাদু ভাই প্রথমজীবন থেকে প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর অনুসারী ছিলেন। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠন এবং বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এম নূরুল ইসলাম। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চে সরাসরি যোগদান এবং সংগঠকের দায়িত্ব পালন করে ছিলেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর পরই তিনি মওলানা ভাসানীর ন্যাপ ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। এম নূরুল ইসলাম দীর্ঘদিন খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে তিনি খুলনা-৪ (রুপসা, দিঘলীয়া তেরখাদা) আসন থেকে চারদলীয় জোটের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বার্ধক্যজনিত কারণে পরে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেননি। পরে তাঁকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টার পদ দেওয়া হয়।
এম নূরুল ইসলাম দাদু ভাইয়ের মরদেহ খুলনা মহানগরীর বাবু খান রোডে তাঁর বাসভবনে রাখা হয়েছে। আজ বুধবার বাদ আসর খুলনার সার্কিট হাউস ময়দানে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানায় পরিবারের সদস্যরা।
এর আগে বেলা ১২টায় তাঁকে শ্রদ্ধা জনানোর জন্য কে ডি মোড়ে বিএনপি কার্যালয়ে নেওয়া হবে। তাঁকে টুটপাড়া কবরস্থানে দাফন হবে বলে জানা গেছে।
খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকসহ গণ্যমান্য অনেকেই মরহুমের মরদেহ দেখতে তাঁর বাসভবনে আসেন।
সদ্য প্রয়াত এম নূরুল ইসলাম দাদুভায়ের বাবা খাদেম আহমেদ পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। মা আছিয়া খাতুন ও বাবা ডা: খাদেম আহমেদ দম্পত্তির ছয় ছেলে এক মেয়ের মধ্যে এম নূরুল ইসলাম ছিলেন সবার বড়।