ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ঝুলন্ত ইন্টারনেট ও ডিসের তার কাটার প্রতিবাদে ইন্টারনেট ও ডিস ব্যবসায়ীরা সারাদেশে ৩ ঘণ্টা সেবা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের এই ঘোষণা আমলে নিয়ে আগামীকাল (রোববার) ডিএসসিসির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও ডিএসসিসির কর্মকর্তারা আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন বলে জানান ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা (উ-সচিব) মো: রাসেল সাবরিনা।
তিনি বলেন, ডিএসসিসি এলাকায় ব্যবসা করার জন্য ইন্টারনেট ও ডিস ব্যবসায়ীদের বেশকিছু আবেদন পড়েছে। সেই আবেদন ও ক্যাবল অপসারণ বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
জানা গেছে, ইন্টারনেট ও ডিস ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ারিতে ইতোমধ্যে গ্রাহকদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। করোনাকালীন সময়ে ইন্টারনেট ও ডিসের সেবা বন্ধ রাখলে অনলাইন ক্লাস, পরীক্ষা, সরকারি-বেসরকারি অফিস, ভার্চুয়াল সভা, কেনাকাটায় সমস্যা পড়বে মানুষ। এতে দেশ আরেকধাপ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে।
ডিএসসিসি ঝুলন্ত ইন্টারনেট ও ডিশের ক্যাবল অপসারণের প্রতিবাদে রোববার থেকে দেশে প্রতিদিন ৩ ঘণ্টা ইন্টারনেট ও ডিস সংযোগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)।
ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি ব্যবসায়ীদের কয়েকজন জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সংযোগের বিকল্প ব্যবস্থা না করে এভাবে তার কাটায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এতে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, ডিএসসিসি ইন্টারনেট ও ডিস ক্যাবল অপসারণ অভিযান বন্ধ না করলে রোববার থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা সেবা বন্ধ থাকবে।
জানা গেছে, গত ৩০ জুলাই ডিএসসিসির বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস নগরীতে অবৈধ দৃষ্টিকটূ ও ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাবল অপসারণ করার ঘোষণা দেন। মেয়রের এমন ঘোষণার পর ৫ আগস্ট থেকে নগরজুড়ে ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণে নামে ডিএসসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ইন্টারনেট ও ডিস ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ারির পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তিক কর্মকর্তা মো: রাসেল সাবরিনা বলেন, শুক্র-শনিবার বন্ধের দিনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ থাকে। আর ইন্টারনেট ও ডিস ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ারির ব্যাপারে সিটি করপোরেশন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। কারণ ডিএসসিসির মেয়র মহোদয় ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ইংল্যান্ডে গেছেন। আজকে দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন তাই বাস্তবায়ন করা হবে। এ নিয়ে আগামীকাল সিটি করপোরেশন আলোচনায় বসার কথা রয়েছ।
মো: রাসেল সাবরিনা আরও বলেন, ডিএসসিসি এলাকায় গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ইন্টারনেট ও ডিসের তার অপসারণ করেছি। রোববার থেকে ফের অপসারণের কাজ চলানো হবে কিনা সেটি মেয়র মহোদয় সিদ্ধান্ত দেবেন। যেসব তার ঝুলে মানুষের শরীর পর্যন্ত আসছে সেগুলো কেটে দেয়া হয়। সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯-এ বলা আছে- সিটি করপোরেশন এলাকায় কোন ব্যবসা করতে গেলে মেয়রের অনুমোদন লাগবে। রাস্তায় পাশে ইলেক্ট্রনিক পোল ব্যবহার করছে কিন্তু ফি পরিশোধ করছে না। ইন্টারনেট ও ডিস সংযোগ মাটির নিচ দিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনাও করছে সিটি করপোরেশন।
আরএসপিএবি দাবি করেছে- ক্যাবলের স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তার কাটা যাবে না। ইন্টারনেট ও ডিস ক্যাবলের দাম নির্ধারণ করতে হবে। গ্রাহক পর্যায়ে সেবা স্বল্পমূল্যে দিতে এনটিটিএনের মূল্য সরকারকে নির্ধারণ করতে হবে।