কোয়ারেন্টাইন ব্যর্থতায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে: ডব্লিউএইচও

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মনে করছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হলো সন্দেহভাজন আক্রান্তদের কোয়ারেন্টাইনে রাখতে না পারার ব্যর্থতা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি পরিস্থিতিবিষয়ক পরিচালক ড: মাইকেল রায়ান বলেছেন, সামর্থ্য থাকলে তিনি প্রতিটি নিশ্চিত আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা সবাইকে সঠিক মেয়াদে কোয়ারেন্টাইনে রাখতেন।

সোমবার (১৯ অক্টোবর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মহামারি করোনা ভাইরাসের শুরুর দিক থেকে এর বিস্তার রোধে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের ১৪ দিন পর্যন্ত আলাদা রাখা বা কোয়ারেন্টাইনে থাকার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে।  ভাইরাসটির কার্যকর ও স্বীকৃত কোনও প্রতিষেধক না পাওয়া পর্যন্ত সংক্রমণ ঠেকাতে এই প্রক্রিয়ার ওপর জোর দিয়ে আসছে সংস্থাটি। তারপরও গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে।

ডব্লিউএইচও কর্মকর্তা ড: মাইকেল রায়ান বলেন, আমি বিশ্বাস করি না, কোনো জায়গাতেই সঠিকভাবে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। আর সেটিই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ড: মাইকেল রায়ান বলেন, গত এক সপ্তাহে ইউরোপীয় অঞ্চলে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার ৪৮টি সদস্য দেশের মধ্যে অর্ধেকের বেশি দেশে আক্রান্ত বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। আর এই বৃদ্ধির সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর হার শনাক্ত করার কাজও শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, কিছুটা স্বস্তির খবর হলো যারা বর্তমানে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের বেশির ভাগই অল্প বয়সী। এ ছাড়া চিকিৎসা পদ্ধতিরও উন্নতি হয়েছে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক ব্যবহারের কারণে আক্রান্তদের শরীরে ভাইরাসের পরিমাণও কম থাকছে।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১১ লাখ ২২ হাজার ৯৮৪ জনের এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৫৬৬ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ কোটি ৩ লাখ ৫২ হাজার ৯১৮ জন।

সুস্থতার দিক থেকে প্রথম অবস্থানে উঠে এসেছে ভারত (৬৭ লাখ ৩০ হাজার ৬১৭ জন), দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র (৫৫ লাখ ৩ হাজার ২৬৮ জন) এবং তৃতীয় অবস্থানে আছে ব্রাজিল (৪৬ লাখ ৮১ হাজার ৬৫৯ জন)।

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৫টি দেশে ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।