কিশোরগঞ্জে জমি ও পারিবারিক বিরোধের জেরেই ছোট ভাই দীন ইসলাম বড় ভাই, ভাবী ও শিশু ভাতিজাকে হত্যা করে গর্তে পুঁতে রাখেন লাশ। পুলিশের কাছে সে কথা স্বীকার করেছেন তিনি। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডে এখনও থানায় মামলা হয়নি। আটক অপর দুই বোন ও ভগ্নিপতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের জামসাইট গ্রামের মৃত মীর হোসেনের ছেলে নিহত মুদি ব্যবসায়ী আসাদ মিয়ার সঙ্গে তার ছোট ভাই দীন ইসলামের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ছিল। বসতবাড়ির এক চিলতে জমি আত্মসাৎ করতেই ব্যবসায়ী আসাদ, তার স্ত্রী পারভিন আক্তার ও তাদের ১২ বছরের শিশু ছেলে লিয়নকে হত্যা করা হয়।
বুধবার রাতে স্ত্রী ও এক সন্তানকে নিয়ে নিজের ঘরে ঘুমিয়েছিলেন আসাদ। বৃহস্পতিবার সকালে তাদের দুই ছেলে মোফাজ্জল ও তোফাজ্জল ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে বাবা-মা ও ছোট ভাইকে খুঁজে না পেয়ে এলাকাবাসীকে জানান। পরে রক্তের দাগের সূত্রধরে বাড়ির আঙ্গিনায় মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় তিনজনের মরদেহ বাড়ির আঙিনায় মাটির নিচ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত আসাদের ছেলে জানান, আমার বাবা, মা ও ভাইকে যারা খুন করেছেন; তাদের অনেকেই বাইরে ঘুরতেছে। তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক।
ঘটনার পরপরই আটক করা হয়, নিহত আসাদের ছোট ভাই দীন ইসলাম, বোন নাজমা, তাসলিমা ও এক বোনের জামাই ফজলুর রহমানকে। তবে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে দীন ইসলাম। হত্যায় তার দুই বোনসহ এক বোনের স্বামীও অংশ নেয়।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মাশরুকুর রহমান খালেদ শুক্রবার গণমাধ্যমকে জানান, এ ঘটনায় আসাদের ছোট ভাই দীন ইসলামসহ অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার পর আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দীন ইসলামসহ অন্যদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মিলন বলেন, শুধু রোগাক্রান্ত দীন ইসলাম, তার বৃদ্ধা মা ও বোনের দ্বারা তিনজনকে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে রাখা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়া খুনি থাকতে পারে বলে ধারণা তার।
বনগ্রাম ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য মো: জাহাঙ্গীর জানান, কিছুদিন আগে আসাদের মা জমি নিয়ে বিরোধ সংক্রান্ত বিষয় মীমাংসার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে দরখাস্ত দিয়েছিলেন। আগামীকাল শনিবার আসাদের বাড়িতে শালিস হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই নির্মম এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। নিহত তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে।