যশোরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর গায়ে আগুন, অভিযুক্ত স্বামী আটক

যশোরে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আগুনে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে ঝিকরগাছা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের কাউনিয়া দাস পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এসময় স্বামী প্রদীপও অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। প্রতিবেশীরা প্রদীপের বিরুদ্ধে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ তোলায় পুলিশ তাকে আটক করেছে। বর্তমানে তিনি পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

প্রতিবেশীরা জানান, রাতে প্রদীপ ও তার স্ত্রী পুতুলের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছিল। একপর্যায়ে তাদের চিৎকার শুনে বাইরে এসে দেখেন ঘরের মধ্যে আগুন জ্বলছে। এসময় প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে ঝিকরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। ঝগড়ার কারণে প্রদীপ তার স্ত্রীকে আগুন লাগিয়ে দিতে পারে বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের।

যশোর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: আহম্মেদ তারেক শামস চৌধুরী জানান, রাত ৩টার দিকে দগ্ধ দম্পতিকে হাসপাতালে আনা হয়। পুতুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়। এছাড়া আহত প্রদীপের দুটি হাত, চোয়াল ও মাথার চুল পুড়ে গেছে। তাকে সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

আহত প্রদীপ জানিয়েছেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে পুতুলের সাথে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে পুতুলের ঘরের বাইরে যেতে চাইলে তিনি বাধা দেন এবং দরজা আটকে শুয়ে পড়েন। পুতুল ক্ষিপ্ত হয়ে পাশের ঘরে গিয়ে নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। তৎক্ষণাৎ তিনি আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এতে তার দুহাত পুড়ে যায়। পরে প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতাল ভর্তি করে।

প্রদীপ আরো জানান, তিনি পুতুলকে খুব ভালোবাসেন। একবছর আগে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে তিনি পুতুলকে বিয়ে করেছিলেন। প্রতিবেশীদের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি। প্রদীপ সনাতন ধর্ম গ্রহণের আগে মো: আলামিন হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিকরগাছা থানার অফিসার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা শুধু ছেলের বক্তব্য শুনেছি। সে দাবি করেছে তার স্ত্রী নিজে গায়ে আগুন দিয়েছে। মেয়ের বক্তব্য পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। আপাতত প্রদীপকে আটক করে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি বলে জানান তিনি।