কুড়িগ্রামে স্কুলছাত্রীকে হত্যার দায়ে যুবকের আমৃত্যু কারাদণ্ড

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে স্কুল ছাত্রীকে হত্যার দায়ে এক যুবককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মান্নান এ দণ্ডাদেশ দেন। রায়ে অপর দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম আনোয়ারুল ইসলাম। আনোয়ারুল রৌমারী উপজেলার বাতারগ্রামের মো: ছফের আলীর ছেলে।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, শৌলমারী ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের অধিবাসী মৃত আব্দুল হাই আকন্দের কন্যা এবং শৌলমারী এমআর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরজিনা খাতুনকে দীর্ঘদিন ধরে স্কুল যাওয়া আসার পথে প্রেমের প্রস্তাব দেয়াসহ নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিল পার্শ্ববর্তী চ্যাংটাপাড়া গ্রামের আব্দুল বাতেনের বখাটে ছেলে আইয়ুব আলী (২০)। এ নিয়ে আইয়ুব আলীর পরিবারের কাছে বিচার দিলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় ২০১৫ সালে এসএসসি পাস করার পরপর আরজিনা খাতুনের অন্যত্র বিয়ে দেয়ার চেষ্টা শুরু করে তার পরিবার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আইয়ুব আলী। এরপর এরই জের ধরে আইয়ুব আলী ও তার সঙ্গী আনোয়ারুল ইসলামসহ আরো দুই থেকে তিনজন মিলে ২০১৫ সালের ১৪ জুন সকালে জবাই করে হত্যা করে আরজিনা খাতুনকে।

এ ঘটনার পর পালানোর সময় গায়ে লেগে থাকা রক্ত ধোয়ার জন্য চ্যাংটাপাড়া গ্রামের কোমল রবিদাস নামক চৌকিদারের বাড়ির পাশের ডোবায় নামলে অজ্ঞান হয়ে পানিতে পড়ে যায় আইয়ুব আলী। এ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন আইয়ুব আলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে ঘটনার দিন বিকেলে নিহত আরজিনা খাতুনের মা সাজেদা বেগম (৫৯) বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আনোয়ারুল ইসলামসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরমধ্যে ২০১৫ সালের ১৭ জুন তারিখে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আনোয়ারুল ইসলাম। এছাড়া মামলায় ৩৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।

রাষ্ট্র পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম আব্রাহাম লিংকন এবং আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট মুহা. ফখরুল ইসলাম, সাখাওয়াত হোসেন ও আলতাফ হোসেন মামলা পরিচালনা করেন।

এ প্রসঙ্গে পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম আব্রাহাম লিংকন বলেন, এ ধরণের দণ্ডাদেশ প্রদানের ঘটনা জেলায় এটি প্রথম। এজন্য রায়টি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।