যুবলীগের সাবেক নেতা আনিছের শতকোটি টাকার সম্পদ জব্দ

যুবলীগের বহিষ্কৃত দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিছুর রহমানের ১০০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (২৩ নভেম্বর ) অবৈধ সম্পদ মামলার তদন্তে উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান এসব সম্পদ জব্দ করেছেন বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।

জব্দকৃত সম্পদের মধ্যে রয়েছে রাজধানীর কলাবাগানে ৫ তলা বাড়ি, ধানমন্ডি ও ওয়ারীতে দুটি ফ্ল্যাট, এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্লানে ৩ দোকান ও  ১৩ স্কোয়ার ফুট বাণিজ্যিক স্পেস এবং গুলশান ২ এলাকার একটি মার্কেটে ২টি দোকান। এছাড়া রাজধানীর বাইরে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বোয়ালিয়ায় বিলসাবহুল বাড়ি, একটি পেট্রোল পাম্প, ৩০ কোটি টাকার ১৫ বিঘা জমি ও কেরাণীগঞ্জে ৪০ কাঠা জমি পেয়েছে দুদক। এছাড়া ৫০ কোটি টাকার ব্যাংক লেনদেন পেয়েছে দুদক।

এর আগে কাজী আনিছুর রহমান ও সুমী রহমানের প্রায় ১৬ কোটি টাকার আয়কর নথি জব্দ করে দুদক। ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কাজী আনিছুর রহমান ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা ও তার স্ত্রী সুমি রহমানের ১ কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের দায়ে মামলা করে দুদক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আনিছুর রহমান ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিজ নামে ও বেনামে অর্জিত ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং এক কোটি ৭২ লাখ ৩৬ হাজার ৮২১ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্লান সেন্টার লেভেল ১টি ফ্ল্যাট, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর রসুলপুরে ২৪.৫০ শতাংশ জমি, ঢাকার আর কে মিশন রোডে আমিন ভবনের পঞ্চম তলায় ১৩০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ঢাকার স্বামীবাগ রোডে ৮২০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ধানমন্ডিতে ফ্লাট, শুক্রাবাদের শেরেবাংলা নগর ৭৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ধানমন্ডি ১৫ নম্বর রোডের একটি ফ্ল্যাটসহ সর্বমোট ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকা স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। অনুরূপভাবে আরফিন এন্টারপ্রাইজ কোম্পানির শেয়ার মূল্য ৮৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্টেশনের শেয়ার মূল্য ৩৬ লাখ টাকা, প্রাইজবন্ড তিন লাখ টাকা, গাড়ি মূল্য ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকাসহ মোট ১ কোটি ৭২ লাখ ৩৬ হাজার ৮২১ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

বিএফআইইউ থেকে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র অনুসারে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাংকে রাখা ব্যাংক এশিয়া, প্রাইম ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইউসিবিএল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার ব্যাংক ও ডাচ বাংলা ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট, সেভিং অ্যাকাউন্ট এফডিআর এইচটিসিসহ বিভিন্ন ফর্মে ৫ কোটি ৩৪ লাখ ৬৭ হাজার ৪৯৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে ১২ কোটি ৮০ লাখ ৬০ হাজার ৯২০ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। যা আয়কর নথিতে উল্লেখ নেই এবং এসবের সপক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট বৈধ উৎস নেই।

অন্যদিকে, সুমি রহমানের নামে ১ কোটি ২৫ লাখ ৫০০ টাকার স্থাবর ও ৫৬ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকার অস্থাবর টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় মামলা করা হয়েছে।

২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এরপর গত ৩০ সেপ্টেম্বর অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করে সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন। তার নেতৃত্বে আট সদস্যের টিম অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করছেন।