আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের যেসব ইউনিটের সম্মেলন হয়েছে, সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার ক্ষেত্রে সুক্ষভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনুপ্রবেশকারী, হাইব্রিড ও সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করে তাদের বাদ দিয়ে ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের কমিটি রাখতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
শনিবার (৩ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে দলটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে বৈঠক শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা।
করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারের বৈঠক সীমিত পরিসরে হয়েছে। এতে কার্যনির্বাহী কমিটির প্রায় অর্ধেক নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর আগে সবার করোনা পরীক্ষা করা হয়।
করোনাকালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় বৈঠকে তাদের ধন্যবাদ জানান দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। শীতকালে করোনার সেকেন্ড ওয়েভের আশঙ্কার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে এবং মানুষের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের আট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকরা স্ব স্ব বিভাগের সাংগঠনিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। সারা দেশে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদারের লক্ষ্যে বিভাগভিত্তিক কমিটি দলীয় প্রধানের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
রংপুর বিভাগের টিম সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড: হাছান মাহমুদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল স্বপন। রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বে আছেন ড: হাছান মাহমুদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। খুলনা বিভাগের দায়িত্বে আছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে আছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন। ঢাকা বিভাগের দায়িত্বে আছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বে আছেন দীপু মনি এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। সিলেট বিভাগের দায়িত্বে আছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক। চট্টগ্রাম বিভাগের টিম সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন মাহবুব উল আলম হানিফ এবং আহমদ হোসেন। কমিটিতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বিভাগভিত্তিক সম্পাদক এবং সদস্যরাও আছেন।
বিভাগীয় এসব কমিটি অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা জেলা-উপজেলার ও মহানগর কমিটি যাচাই-বাছাই করে দলীয় সভাপতির কাছে জমা দেবেন। সভাপতি কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে কমিটি থেকে অনুপ্রবেশকারী, হাইব্রিড, সুবিধাবাদীদের ছেঁটে ফেলতে বলেছেন শেখ হাসিনা। তিনি পরীক্ষিত ও ত্যাগীদের কমিটিতে জায়গা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জেলায় সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসণে বিভাগীয় কমিটিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ অব্যাহত থাকায় স্বাস্থবিধি মেনে পরিস্থিতি অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা কমিটিগুলো নতুন করে গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে ব্যাপক জনসমাগম যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। সম্মেলন ছাড়া কোনো ইউনিটের কমিটি না করতেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।