ফাঁকা মাঠে গোল দিচ্ছেন জো বাইডেন

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও শীর্ষ সহযোগীদের অনেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে যখন হাসপাতাল-কোয়ারেন্টাইনে, তখন একরকম ফাঁকা মাঠে গোল দিচ্ছেন ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেন। বৃহস্পতিবার হঠাৎ ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হোপ হিকস করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরপরই পাল্টে যেতে থাকে ট্রাম্পশিবিরের পরিবেশ। হিকসের আক্রান্তের পর স্ত্রী মেলানিয়াসহ ট্রাম্পের করোনা পরীক্ষা করা হলে দুজনেরই রেজাল্ট পজিটিভ আসে। শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের ক্যাম্পেইন ম্যানেজার বিল স্টেপিয়েন, হোয়াইট হাউসের সাবেক পরামর্শক কেলিয়েন কনওয়েসহ জ্যেষ্ঠ সাত সহযোগীর করোনা পজেটিভ আসার পর তারা এখন হাসপাতাল-কোয়ারেন্টিনে আছেন। খবর গার্ডিয়ান।

করোনা আক্রান্ত হয়ে ট্রাম্প সামরিক হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর শুক্রবার দ্রুতই নিজের ও স্ত্রী জিলের করোনা পরীক্ষা করেন জো বাইডেন। রেজাল্ট নেগেটিভ আসার সঙ্গে সঙ্গে তার ক্যাম্পেই বিমান উড়িয়ে চলে যায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্য মিশিগানে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই রাজ্যে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে হিলারিকে হারিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলন ট্রাম্প। মিশিগানের ভোটারদের নিজের পক্ষে টানতে গিয়ে দেয়া বক্তব্যে ট্রাম্পকে খোঁচা দিতেও ছাড়েননি বাইডেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের করোনা আক্রান্ত হওয়া প্রমাণ করে যে, মহামারিকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। করোনার শুরু থেকেই মহামারির বিরুদ্ধে নানা ধরনের কটূক্তি ও বিদ্রূপ করেন ট্রাম্প। করোনার শুরু দিকে ৭৭ বছর বয়সী বাইডেন ডেলাওয়ারে তার বাসভবনে ছিলেন। এ জন্য বাইডেনকে স্লিপি জো, গর্তে লুকিয়ে থাকা কাপুরুষ ইত্যাদি বলে অবজ্ঞা করেন ট্রাম্প। এমনকি প্রথম বিতর্কে বাইডেনের মাস্ক পরিধান করা নিয়ে বিদ্রূপ করে তাকে লোকদেখানো মাস্ক পরিধানকারী বলতেও ছাড়েননি। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তার আরোগ্য কামনা করলেও করোনা নিয়ে পাল্টা খোঁচা দিতেও ছাড়েননি অভিজ্ঞ রাজনীতিক বাইডেন। শুক্রবার মিশিগানে প্রচারণায় জনগণকে মাস্ক পরিধান, হাত ধোয়া, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার আহ্বান জানান ডেমোক্রেটিক প্রার্থী। এ সময় জনগণকে দেশপ্রেমিক হওয়ার জন্যও তাড়া দেন তিনি।
বাইডেন বলেন, এ জন্য কঠিন কিছু হওয়ার দরকার নেই। আপনার কাজটি ভালোভাবে করলেই হল। ট্রাম্পশিবিরে করোনার ধাক্কাটি আসে ২৫ সেপ্টেম্বর শনিবার সুপ্রিমকোর্টের জন্য ব্যারেটসকে বিচারক হিসেবে মনোনয়নের ঘোষণার অনুষ্ঠান থেকে। ওই অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব সহযোগী উপস্থিত ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে তেমন কারও মুখে মাস্ক ছিল না এবং তারা সবাই খুবই কাছাকাছি, গা-ঘেঁষে বসেন। ফলে ট্রাম্পের শীর্ষ সহযোগীদের মধ্যে আরও অনেকের করোনা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনা না হলেও তাদের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এতে করে নির্বাচনের মাত্র এক মাসের কম সময় বাকি থাকতে প্রচারণায় ছেদ পড়ছে রিপাবলিকান শিবিরে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটলগ্রাউন্ড তথা সুইং ভোটার অধ্যুষিত রাজ্যগুলোতে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে ট্রাম্প। প্রথম বিতর্কের পর সিএনএনের উপস্থিত জরিপে দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন বাইডেন। এছাড়া বিভিন্ন জনমত জরিপ ও ফান্ড সংগ্রহেও ট্রাম্পকে পেছনে ফেলেছেন বাইডেন।