ক্ষো‌ভে-অভিমা‌নে জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন সোহেল রানা

ক্ষো‌ভে-অ‌ভিমা‌নে জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক ও চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা)।

শনিবার (১০ অক্টোবর) জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের কাছে ডাকযোগে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি তার পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান। 

তিনি বলেন, তৃণম‌ূ‌লের নেতাকর্মী‌দের অবমূল‌্যায়ন, যা‌দের ত‌্যাগ ও শ্রমে এ দল প্রতি‌ষ্ঠিত সেই ত‌্যাগী‌ নেতাকর্মী‌দের ব‌ঞ্চিত করাসহ নানা অ‌নিয়‌মের কার‌ণে পদত‌্যাগ ক‌রে‌ছি। যেই দ‌লে ত‌্যাগী‌দের মূল‌্যায়ন নেই সেই দ‌লে থাকার প্রশ্নই ওঠে না। 

এসব কার‌ণে পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বর, জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ সব পদ পদ‌বি থে‌কে পদত্যাগ ক‌রেন ব‌লেও জানান সো‌হেল রানা।

সো‌হেল রানার পদত‌্যাগ বিষ‌য়ে জাতীয় পা‌র্টির চেয়ারম‌্যান গোলাম মোহাম্মদ কা‌দের ব‌লেন, চি‌ঠি আমার হা‌তে আ‌সে‌নি, বিষয়টা আ‌মি জা‌নিও না। সো‌হেল রানা দীর্ঘ‌দিন ধ‌রে জাপার রাজনী‌তি‌তে নি‌স্ক্রিয় ব‌লেও জানান তি‌নি।

এদিকে ‌চিঠি পাঠা‌নো কিংবা সো‌হেল রানার পদত‌্যা‌গের বিষ‌য়ে কিছুই জা‌নেন না ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছেন দ‌লের যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম।

সো‌হেল রানা ব‌লেন, এসএ প‌রিবহ‌নে রে‌জিস্ট্রার্ড করে পাঠা‌নো চিঠি দুদ‌ি‌নের ম‌ধ্যে পৌঁ‌ছা‌নোর কথা।
 
পাঠা‌নোর পর থে‌কে পা‌র্টির চেয়ারম‌্যান জিএম কা‌দেরের কাছ থে‌কে কো‌নো ফোন আ‌সে‌ননি ব‌লেও জানান চিত্রনায়ক সো‌হেল রানা।

মাসুদ পারভেজ ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। ছিলেন ঢাবির ইকবাল হলের নির্বাচিত ভিপি।

তিনি জাতীয় পা‌র্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম‌্যান হু‌সেইন মুহম্মদ এরশাদের হাত ধ‌রে ২০০৯ সালে দলটিতে যোগ দেন। তা‌কে এরশাদের নির্বাচন বিষয়ক উপদেষ্টা ও প্রেসিডিয়াম সদস‌্য করে।

৯০ এ দশকের জনপ্রিয় এ চিত্রনায়ক ডা. জিনাত বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র ছেলে মাশরুর পারভেজ জীবরান। অভিনেতা মাসুম পারভেজ রুবেল তার ছোট ভাই।

মাসুদ পারভেজের জন্ম ১৯৪৭  সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। বাংলা চলচ্চিত্র অভিনয়ে নতুন একটি ধারা সৃষ্টির মূল কারিগর তিনি। তার হাত ধরে কয়েক ডজন শিল্পী-কলাকুশলী চলচ্চিত্র জগতে প্রথম পা রাখেন। চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন সোহেল রানা নাম ধারণ করে। ১৯৭২ সালে মাসুদ পারভেজ বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ওরা ১১ জন ছবির প্রযোজক হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। এটি পরিচালনা করেন চাষী নজরুল ইসলাম। 

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে তার অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে তিনি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।