আর্কটিক অঞ্চলের বরফে ঢাকা গ্রিনল্যান্ড থেকে প্রচুর পরিমাণ বরফ গলে সমুদ্রে মিশেছে গত জুলাই মাসে। ড্যানিশ গবেষণা ইনস্টিটিউট পোলার পোর্টাল বলছে, ২০২১ সালে এটি সর্বোচ্চ।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলে এত পরিমাণ পানি সমুদ্রে মিশেছে যে, এই পানি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার পুরোটাই ঢেকে ফেলা যাবে পুরো দুই ইঞ্চি পর্যন্ত। রয়টার্স
১৯৫০ সাল থেকে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এক দিনে এত বেশি বরফ গলেছে গ্রিনল্যান্ডে। অন্য আরো দুটি রেকর্ড বলছে, এর আগে ২০১২ আর ২০১৯ সালে এত বেশি পরিমাণে বরফ গলে যায় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দ্বীপটি থেকে। এত পরিমাণে বরফ গলার কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবের কারণে এমনটা ঘটছে। এটি আশঙ্কা আরো দিন দিন বাড়াচ্ছে।
বেলজিয়ামের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক জানান, এক দিনে ২ হাজার ২০০ টন বরফ গলে পানি হয়ে সমুদ্রে মিশে গেছে। এর মধ্যে ১ হাজার ২০০ টন বরফ গলে পানি হয়ে সমুদ্রে মিশে গেছে। বাকি ১ হাজার টন বরফ অন্য হিমশৈলের সঙ্গে মিশে আবারও বরফে পরিণত হয়েছে। ড্যানিশ আর্কটিক গবেষণা সংস্থা পোলার পোর্টালের একদল গবেষক বরফ গলার বিষয়টিকে ‘ম্যাসিভ মেল্টিং ইভেন্ট’ বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, লরেন অ্যান্ড্রুজ নামে নাসার এক বিজ্ঞানী বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বরফ গলার বিষয়টি দিন দিন সাধারণ ঘটনায় পরিণত হচ্ছে।
গ্রিনল্যান্ডে তাপমাত্রা বেড়ে বরফ গলা শুরু হয়েছে গত ২৮ জুলাই থেকে। আকাশ পরিষ্কার থাকায় অতিরিক্ত সূর্যরশ্মি প্রবেশ করে বরফ গলে পানি হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি গ্রিনল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলের তাপমাত্রা ছিল ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা উদ্বেগজনক বলছেন বিজ্ঞানীরা। চলতি বছরের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত দৈনিক ৯০০ কোটি টন বরফ হারিয়েছে গ্রিনল্যান্ড, গ্রীষ্ম মৌসুমে কখনো এত বরফ গলেনি অঞ্চলটিতে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক জানান, যেহেতু উষ্ণায়নের কারণে গ্রিনল্যান্ড আর আর্কটিক অঞ্চলের উপরিভাগের বরফ গলে যাচ্ছে, বের হয়ে আসছে অন্ধকারে থাকা বরফের স্তর। এই বরফের ঘনত্ব বেশি থাকায় এ স্তর সূর্যের আলো ধরে রেখে পৃথিবীকে আরও উষ্ণ করছে, যেখানে ওপরের বরফের স্তর সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে মহাকাশে পাঠিয়ে দেয়।
পৃথিবীর অন্য যেকোনো অঞ্চলের তুলনায় আর্কটিক অঞ্চলের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়ছে। হিমশৈল মিশে আর্কটিক সাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ এ অঞ্চল বছরের অর্ধেক সময় বরফের অঞ্চল হয়ে থাকার কথা। বরফ গলায় অন্ধকারে থাকা বরফ বেরিয়ে ধরে রাখছে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি। সম্প্রতি গ্রিনল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলের তাপমাত্রা বেড়ে যায় ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা উদ্বেগজনক বলছেন বিজ্ঞানীরা।