ঢাকা: গোপালগঞ্জে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক জাহিদুল ইসলাম বাবু (১৬) হত্যা মামলায় ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে ওই ৫ আসামির প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
গোপালগঞ্জে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক জাহিদুল ইসলাম বাবু (১৬) হত্যা মামলায় ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে ওই ৫ আসামির প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত বিচার মো. আব্বাস উদ্দীন এ রায় দেন।
নিহত জাহিদুল ইসলাম বাবু গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোলাবাড়ীয়া গ্রামের নজরুল মোল্যার ছেলে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়ার নতুন চর গ্রামের বাবুল ফকিরের ছেলে খালিদ ফকির, আনিচ ফকিরের ছেলে মো. বিপুল ফকির, শুকুর মোল্লার ছেলে রাজ্জাক মোল্লা, জেলার কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের ব্যাসপুর গ্রামের মো. খলিল শেখের ছেলে মো. হাসান শেখ ও নড়াইল জেলার লোহাগড়া চাঁচর গ্রামের মো. খোকন মোল্লার ছেলে মো. হোসিয়ার মোল্লা। আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর খালিদ ফকির তার ব্যবহৃত মোবাইল থেকে ফোন করে জাহিদুল ইসলাম বাবুকে জেলা শহরের কাঁচাবাজার সংলগ্ন মেইন রোডে আসতে বলে। পরে ইজিবাইক চালক জাহিদুল ইসলাম বাবু সদর উপজেলার গোলাবাড়ীয়া বাড়ি থেকে আসে। এরপর জাহিদুল ইসলাম নিখোঁজ থাকে। একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশ ঢাকা খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানি উপজেলার ভুলবাড়ীয়া ব্রিজের পাশে ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
২ অক্টোবর জাহিদুল ইসলাম বাবুর পিতা মো. নজরুল মোল্লা বাদী হয়ে খালিদ ফকির ও রাজ্জাক মোল্লার নাম উল্লেখ করে এবং আরও কয়েকজন অজ্ঞাত আসামি করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে পুলিশ এজাহার নামীয় দুই আসামিকে গ্রেফতার তার করে এবং তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চাঁচর গ্রামের মো. হোসিয়ার মোল্লা বাড়ি থেকে ইজিবাইকটি উদ্ধার করে। এরপর পুলিশ ৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘদিন শুনানি শেষে ওই ৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ওই ৫ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন।
আদালতে সরকারপক্ষে সহকারী কৌশলী অ্যাডভোকেট মো. শহিদুজ্জামান খান পিটু ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মো. ফজলুল রহমান খান মামলাটি পরিচালনা করেন।
মামলার বাদী ও নিহতের পিতা মো. নজরুল মোল্লা বলেন, আমার ছেলেকে এই ৫ জনে হত্যা করেছে। দীর্ঘ দিন পর আমি ছেলে হত্যার বিচার পেয়েছি। এ রায়ে আমি ও আমার পরিবার খুশি। আমাদের দাবি দ্রুত এ রায় কার্যকর করা হোক। যাতে কেউ আর এ ধরনের কাজ করতে সাহস না পায় এবং কেউ যেন তার সন্তানকে এভাবে না হারায়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. মোক্তার আলী বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে এ পরিবারটি ন্যায়বিচার পেয়েছে। আশাকরি উচ্চ আদালতে এ রায় বহাল থাকবে এবং রায় কার্যকর হবে।
প্রভাতনিউজ/এবিএস