প্রেমিককে রেখে অন্যের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা : ঢাবি ছাত্রীর আত্মহত্যা

পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রেমিককে রেখে অন্য ছেলের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রুম্পা (২৫) আটঘরিয়া উপজেলার কন্দর্পপুর ভাড়া বাড়িতে আত্মহত্যা করেন।

জানা গেছে, পাবনার ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের বাবুলচরা গ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থী ফারিয়া তাবাসসুম রুম্পা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তিনি থাকতেন শামসুন্নাহার হলে। রুম্পার বাবা ফরিদ উদ্দিন মন্ডল পেশায় সরকারি চাকরিজীবী। জেলার আটঘরিয়া উপজেলার কন্দর্পপুরে ভাইয়ের সঙ্গে ভাড়া বাসায় ছিলেন রুম্পা। এক সপ্তাহ আগে তার ভাই সোনালী ব্যাংক আটঘরিয়ায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগদান করেছেন।

সহপাঠী ও ঘনিষ্ঠজন সূত্রে জানা গেছে, পছন্দের ছেলেকে বাদ দিয়ে অন্যের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ায় সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ভাইয়ের ভাড়া করা বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন রুম্পা।

রুম্পার সহপাঠী হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, রুম্পা খুবই মার্জিত, ভদ্র, মেধাবী ও প্রচণ্ড রকমের ধার্মিক ছিল। আমরা চার বছর রুম্পার সঙ্গে ক্লাস করেছি, কিন্তু একদিনও কোনো ছেলে তার চেহারা দেখেনি। তার আত্মহত্যার খবর শুনে আমরা নিশ্চিত হতে পারছিলাম না-এই মেয়েটা আসলেই রুম্পা কিনা। কারণ কেউই তাকে দেখেনি।

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ক্লাস সেভেন থেকে রুম্পার সঙ্গে একটি ছেলের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। রুম্পার সঙ্গে যে ছেলের সম্পর্ক ছিল সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হওয়ায় রুম্পার পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। এটা নিয়েই পরিবারে দ্বন্দ্ব চলছিল। হয়তো জোর করেই অন্যত্র বিয়ে দিতে চেয়েছিল পরিবার। আর সে কারণেই রুম্পা আত্মহত্যা করতে পারে বলে তাদের ধারণা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড: একেএম গোলাম রব্বানী সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। আমরা ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট থানায় খবর দিয়েছি। তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কখনোই কাম্য নয়। এদিকে নিহত রুম্পার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, রুম্পা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরিবারের লোকজন টের পেয়ে দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় নিহত রুম্পার বাবার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানায় ইউডি মামলা হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে বলে দাবি করেন ওসি আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম।