মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা:)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আজ সোমবার সকাল ১০টার পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে এই সমাবেশ শুরু হয়।
সমাবেশে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে ফ্রান্স দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল বের হয়। মিছিলটি বায়তুল মোকাররম হয়ে পুরানা পল্টন মোড় দিয়ে বিজয়নগরে যায়। সেখানে পুলিশ বাধা দেয়। এরপর মোনাজাত করে কর্মসূচি শেষ হয়।
সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের নেতা জুনায়েদ আহমেদ বাবুনগরী ফ্রান্সের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন এবং ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের দাবিতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বায়তুল মোকাররম এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। সকাল ১০টার মধ্যে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় সেখানে। একপর্যায়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় বিজয়নগর, প্রেসক্লাব থেকে পল্টন, গুলিস্তান সড়ক। আশপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়।
সমাবেশে হেফাজতের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বক্তব্যের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা ও ঘৃণা প্রস্তাব আনার দাবি জানান। এ ছাড়া ফ্রান্সের পণ্য বর্জন, ফ্রান্সের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন এবং ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, হজরত মুহাম্মদ (সা:) পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানব। অথচ তাঁকে নিয়ে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। তাঁরা এ ঘটনায় উপযুক্ত শাস্তি চান।
এদিকে, মুসল্লিদের বিক্ষোভের কারণে পল্টন থেকে কাকরাইল, গুলিস্তানসহ এর আশপাশের সড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। এতে বিপাকে পড়ে সাধারণ মানুষ।
বাকস্বাধীনতা নিয়ে স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের উপকণ্ঠের একটি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কার্টুন প্রদর্শন করেন। ওই ঘটনার পর গত ১৬ অক্টোবর ১৮ বছর বয়সী এক চেচেন কিশোর স্যামুয়েলকে শিরশ্ছেদ করেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য ফ্রান্সের মুসলমানদের দায়ী করেন এবং দাবি করেন, মুসলমানরা ফ্রান্সকে ধ্বংস করে ফেলতে চায়। তিনি এ ধরনের কার্টুন প্রদর্শন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। এ নিয়ে মুসলিম বিশ্বে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন দেশে চলতে থাকে বিক্ষোভ প্রদর্শন যা এখনো অব্যাহত আছে।