কিছু লাভের আশায় আমরা স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকবো না: পরিকল্পনামন্ত্রী

কিছু সুযোগ সুবিধা ছেড়ে দিয়ে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যেতে চায় বাংলাদেশ। এলডিসির কাতারে থাকা কিছু লাভ ছেড়ে দিতে হলেও উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ নতুন কিছু সম্ভাবনাও তৈরি হবে। রোববার (২০ ডিসেম্বর) ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি’ বিষয়ে এক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এসব কথা বলেন।

জাতিসংঘের নীতিমালা অনুযায়ী ২০১৮ সালে বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার সূচকে অগ্রগতির পর স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। আর এই অগ্রগতি টানা ছয় বছর অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২৪ সালে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হবে।

এলডিসি দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কিছু শুল্ক সুবিধা, কম সুদে ঋণ, মেধাস্বত্বের ক্ষেত্রে ছাড়সহ নানা সুবিধা পাওয়া যায়। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হলে এই সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে।

পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন এলডিসি থেকেছি। আর থাকতে চাই না। আরও বেশি দিন থাকতে পারলে হয়তো লাভ আছে, কিন্তু বেশি লাভও ভালো না।

বাংলাদেশ উন্নয়নের একটি ধাপ পূরণ করে আসায় চাইলেও এলডিসি হয়ে থাকা সম্ভব না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের উত্তরণে যেতেই হবে। তাই সময় এসেছে এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার।

ওয়েবিনারের আলোচ্য বিষয়ের উপর উত্থাপিত মূল প্রবন্ধের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণে ও উত্তরণের পরও চ্যালেঞ্জ আসবে। সেটি অমূলক নয়। কিন্তু সঙ্গে আসবে হাজার সম্ভাবনাও। তাই দরকার মানসিক বিভ্রান্তি দূর করা।

তিনি বলেন, উত্তরণের পর দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও রাজনীতিতে পরিবর্তন আসবে। প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়বে। প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তির প্রসার ঘটবে। দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি হবে। এজন্য কিছুটা ঝুঁকি তো নিতেই হবে।

ট্রানজিশন পিরিয়ড বাড়াতে বাণিজ্য সচিবকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার পরামর্শও দেন পরিকল্পনা মন্ত্রী।

অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ), র‌্যাপিড এবং দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ ওয়েবিনার আয়োজন করে। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ও বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন।