সোহেল রানাকে জামিন দিতে হাইকোর্টের রুল

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নিম্ন আদালতের দেওয়া জামিন স্থগিত থাকবে। বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এই আদেশ দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোঃ খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী শামসুন নাহার কনা। অন্যদিকে, সোহেল রানার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোঃ আলমগীর হোসেন ও মোঃ কায়সার জাহিদ।

এর আগে গত ১৭ মে সংশ্লিষ্ট মামলায় সোহেল রানাকে জামিন দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬। পরে ওই জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানায় দুদক কর্তৃপক্ষ।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা ভবন। ওই ঘটনায় এক হাজার ১৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত ও পঙ্গু হন প্রায় দুই হাজার শ্রমিক। দুই হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। পরে ওই ঘটনায় ভবন নির্মাণে অনিয়মসহ বেশ কিছু অভিযোগে ভবন মালিক সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার সম্পদের হিসাব চেয়ে কারাগারে নোটিশ পাঠায় দুদক। তখন কারাগার থেকে সম্পদের কোনো হিসাব দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন সোহেল রানা। এর পরই আয়কর বিভাগ থেকে তাঁর সম্পদ ও আয়ের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেখানে সম্পদের হিসাবে অসঙ্গতি পাওয়া যায়। পরে সোহেল রানার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। দুদকের উপপরিচালক মাহবুবুল আলম এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে দুই কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৭৯৩ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য উল্লেখ করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১২-১৩ অর্থবছরে সোহেল রানার আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় তাঁর ব্যাংকে এক লাখ ৭৮ হাজার ৯৫৩ টাকা প্রদর্শন করা হয়। কিন্তু দুদক অনুসন্ধানে গিয়ে দেখে তিনটি ব্যাংক হিসাবে তাঁর নামে ২৭ লাখ ৮০ হাজার ৭৬৭ টাকা জমা আছে। এখানে তিনি ২৬ লাখ এক হাজার ৮১৪ টাকা আয়কর নথিতে প্রদর্শন করেননি।

এ ছাড়া সাভার বাজার রোড এলাকায় রানা টাওয়ারের চতুর্থ তলা পর্যন্ত নির্মাণ ব্যয় এক কোটি ৩০ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯৪ টাকা দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে তিন কোটি ৫৯ লাখ ২৮ হাজার ৫৯৪ টাকা ব্যয় হয় বলে দুদক অনুসন্ধানে জানতে পারে। এখানেও সোহেল রানা দুই কোটি ২৮ লাখ ৪১ হাজার ৯৭৯ টাকা কম দেখান।