গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজিবি) সক্রিয় দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছে র্যাব। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে উগ্রবাদী বই ও ২৩ পাতা লিফলেট উদ্ধার করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়। র্যাব-১-এর স্পেশালাইজ কোম্পানি পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবদুল্লাহ আল-মামুন গতকাল রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন।
আটক ব্যক্তিরা হলেন ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানাধীন মীর কান্দাপাড়া এলাকার সারোয়ার হোসেন সবুজ (২০) ও একই জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার করুয়াপাড়া এলাকার এহসানুল হক (২৪)। তাঁদের মধ্যে সারোয়ার গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা ইউনিয়নের বেতঝুড়ি (মহিলা মোড়) মসজিদের এবং একই উপজেলার বড়বাইদ আবদুল হামিদ মাস্টার জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবদুল্লাহ আল-মামুন জানান, বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করতে এবং জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি, ধর্মীয় উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচারের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ও নাশকতা ঘটানোর উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী দলের কতিপয় সক্রিয় সদস্য গাজীপুরের শ্রীপুর থানাধীন দক্ষিণ বারতোপা এলাকার বারতোপা বাজার ১ নম্বর মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের সামনের মাঠে একত্রিত হয়। এমন গোপন খবর পেয়ে র্যাব-১-এর সদস্যরা রোববার ভোরে সেখানে অভিযান চালিয়ে সারোয়ার হোসেন সবুজ ও এহসানুল হককে আটক করেন। এ সময় তাঁদের দেহ তল্লাশি করে ১০টি উগ্রবাদী বই ও ২৩ পাতা লিফলেট উদ্ধার করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, আটক ব্যক্তিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হুজিবির সক্রিয় সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। তাঁরা শ্রীপুরে মসজিদের ইমাম ও খতিবের পেশার পাশাপাশি নির্জন গহীন বনে প্রশিক্ষণ ও নতুন সদস্য সংগ্রহে লিপ্ত ছিলেন। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর তাঁরা গোপনে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কাশ্মীর ও আফগানিস্তানে যাওয়ার পরিকল্পনা করাসহ দেশের অভ্যন্তরে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন।
এ ছাড়াও তাঁরা আফগান তালেবানদের সমর্থক হিসেবে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে আসছিলেন। তাঁরা শ্রীপুরে বারতোপা এলাকার নির্জন গহীন বনে তালেবানি প্রশিক্ষণ দেন। তাঁরা আফগানিস্তান ও কাশ্মীরে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জিহাদের জন্য সহযোগীদের পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়াসহ পরস্পর যোগসাজশে একত্রিত হয়ে উগ্রবাদে বিশ্বাসী সহযোগীদের সহায়তায় ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে হত্যা এবং প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি সাধনের জন্য ওই স্থানে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিটিং করার উদ্দেশ্যে অবস্থান করছিলেন।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবদুল্লাহ আল-মামুন আরো জানান, আটক ব্যক্তিরা নিজেদের সংগঠনের উগ্রবাদী কার্যক্রমে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য উগ্রবাদী বই ও লিফলেট বিতরণ, তহবিল গঠন, বাংলাদেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করাসহ দেশের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট, নিষিদ্ধ সংগঠনকে সমর্থন, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস ও গুপ্তহত্যার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন এবং বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার কাজে লিপ্ত ছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।