টাঙ্গাইলের বাসাইলে বাল্য বিবাহের কারণে কলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর (১৪) মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (২৫অক্টোবর) ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়।
গত ৩৪ দিন আগে তার বিয়ে হয়। ডাক্তার বলছেন মৃত্যুর আগে মেয়েটির গোপনাঙ্গতে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নুরনাহার (১৪) পড়া লেখায় ছিল মেধাবী।পরিবার অসচ্ছল হওয়ায় মেয়েটি তার নানার বাড়ি উপজেলার কলিয়া গ্রামে থাকতেন। এক পর্যায়ে মেয়েটির উপজেলার ফুলকি পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাস ফেরত রাজির খানের (৩৪) সঙ্গে বিয়ে হয় । তবে মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়ায় তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে হওয়ায় বিয়ের পর থেকেই তার যৌনাঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়।
এক পর্যায়ে নুরনাহারের শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করান।পরে গত ২২ অক্টোবর তাকে টাঙ্গাইলের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয় ।অবস্থার অবনতি হলে তাকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (২৫অক্টোবর) ভোরে তার মৃত্যু হয় । ওই দিন ময়নাতদন্ত শেষে তার নানার বাড়ির স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এ ব্যাপারে নুরনাহারের নানা লাল খান বলেন, ইতো পূর্বে মেয়ে টির বিয়ের রাত থেকেই রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে জানিয়েছিল।এ জন্য নুরনাহারের শাশুড়ি তাকে গ্রাম্য কবিরাজের নিকট থেকে ওষুধ খাওয়াচ্ছিলেন। পরে রক্তক্ষরণ বেশি হলে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: ফিরোজুর রহমান বলেন, নারীদের প্রথম যৌনমিলনে ভয় ও আতঙ্ক কাজ করে । অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে হলে রক্তক্ষরণ হতে পারে । এজন্য দ্রুত গাইনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল মতিন বলেন, পুলিশ অভিযোগটি তদন্ত করছে । ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।