প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে প্রত্যাশা

প্রায় তিন বছর পর দিল্লি সফর করছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য নির্বাচনের আগের বছরে শেখ হাসিনার এই সফরের গুরুত্ব নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। টানা ১৩ বছর ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ ভারতকে বাংলাদেশের জন্য স্পর্শকাতর চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে।

কিন্তু যেসব বড় ইস্যুতে বাংলাদেশের স্বার্থ জড়িত- সেগুলোর মীমাংসা হচ্ছে না। তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে চুক্তি ঝুলে রয়েছে লম্বা সময় ধরে। অন্যদিকে, ভারতের প্রতিশ্রুতির পরও সীমান্তে মানুষ হত্যা থামছে না। ফলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরকে ঘিরে প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির প্রশ্নে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। বিশ্লেষকদের অনেকে বলেছেন, বাংলাদেশের স্বার্থের ইস্যুগুলোতে মীমাংসা না হওয়ায় যেহেতু অনেক সমালোচনা রয়েছে, সেকারণে শেখ হাসিনার এবারের সফর তার সরকার এবং আওয়ামী লীগের জন্য রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ ভারত সফর করেন ২০১৯ সালের অক্টোবরে। এরপর ২০২১ সালের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঢাকা সফরে এসেছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ উপলক্ষে। মোদির আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা এখন ভারতে ‘রিটার্ন ভিজিট’ বা ‘ফিরতি সফর’ করছেন বলে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যেও এই সফরের রাজনৈতিক দিক নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। তাদের অনেকে শেখ হাসিনার ভারত সফরকে রাজনৈতিক দিক থেকে দেখতে রাজি নন। তারা বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনের সময় রাজনীতিতে ভারতের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং সমস্যাগুলো ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় বা আলোচনায় আসে।এছাড়া আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বা বিরোধীদল বিএনপি বিভিন্ন সময় ভারত ও আওয়ামী লীগকে ঘিরে নানা রকম বক্তব্য দিয়ে থাকে। ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী যখন ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরে যান, তখন দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলোতে প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির নানা হিসাব-নিকাশ নিয়ে আলোচনা চলে দেশের রাজনীতিতে।

তবে আঞ্চলিক রাজনীতির আলোচনায় এই অঞ্চলে চীনের প্রভাবের বিষয়ও উঠতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। তারা বলেন, বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন সময় চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে, ভারতে এমন একটি মনোভাব তৈরি হয়েছে। এদিকে ঢাকায় কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশে চীনের প্রভাব কমাতে এবার নয়াদিল্লী ঢাকার সাথে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে জোর দিতে পারে।